Saturday, 3 October 2015

"আয়না কথন"

রাত গভীর হলে যখন খোলা জানালায় নিথর-নিস্তব্ধ ঝিঝি পোকা ঘুমিয়ে যায়,আমি তখন পথে নামি।

চারদিক নিস্তব্ধ,রাস্তার কুকুরগুলি ও তাদের নিত্যদিনের কর্মব্যস্ততা ভুলে যায়,কারও কারও সাদা-কালো দিনগুলি রাতে রঙীন হয়ে উঠে।মাঝ রাস্তায় আসতেই মাঝে মাঝে উচুতলার বাড়ীগুলো থেকে হাসির শব্দ ভেসে আসে।তেমনি এক হাসির মুহূর্তে কোন এক বাড়ীর সম্মুখে থেমে গিয়েছিলাম আমি! বলেছিলাম ভূত! ভূত! আরও খিলখিলিয়ে হেসে উঠেছিল সে!
তারপর আচমকা আলোর ঝলকানিতে সে থেমে গেল অপ্রস্তুতের মত।আমি নিঃশব্দে বলেছিলাম, শ্রাবণী!  বুকের বসন হারালো কোথায়! সলজ্জ মুখটি ঢাকলে অন্ধকারে! তারপর কত রাত আমি হেটেছি,পায়চারী করেছি,ছুটেছি নিথর পায়ে এদিক-সেদিক! রাস্তার কুকুরগুলির সাথে পরিচয় পর্ব সেরেছি,ওরা এখন আর আমাকে দেখে বিরক্ত হয়না।আমি রাত্রীর যাত্রী দীর্ঘ অমানিশা দুপায়ে মাড়িয়ে হাতড়ে ফিরেছি সেই নির্মল হাসির উৎস।আর বলেছি মনে মনে,কেন এ ক্ষণিক প্রলয়! নিস্তব্ধ নিরব রাতে যখন কারও আকাঙ্খিত রিংটোন বেজে ওঠে,তখন আমি জানালার কাছে গিয়ে দাড়াই;গৃহ অভ্যন্তরে হয়ত কোন এক শ্রাবণী তখন ঘুমদেশে রাতের তাঁরা  গুনে,ছড়া কেটে ঘুম পাড়ায় তার রাজকুমারকে! আমি আবার ফিরে আসি।নিজের ডেরায় ফিরে ক্লান্ত হতে ভুলে যাই,দেয়ালে টাঙানো একটুকরো আয়নার বায়নায় নিজেকে রঙ্গমঞ্চের শিল্পী মনে হয়।হাসছি-কাঁদছি,ছুটে চলেছি,গেয়ে চলেছি, ভেতর থেকে কলকাঠি নাড়ছে নাট্যকার।
আমি শুধাই,  এই নটী-নাট্য কার? আয়নার সাথে ফিসফিস করে কথা বলি।আমার আবেগ-অনুভূতিগুলো বোঝে ও,কত সুন্দর করে অনুবাদ করে।
আমি অবাক হই,আমার চোখে চোখ রেখে ও কথা বলে!

পাদটীকাঃ কোন এক শ্রাবণে যখন ভিজে ভিজে গায়ে কাঁদা মাখিয়ে ঘোর অন্ধকারে কেউ ঘরে না ফিরে ছুটে চলতে চায়,কোন এক শ্রাবণী এসে তাদের থামিয়ে দেয়! তারপর নিরুদ্দেশ...শ্রাবণীরা নিজে অঝোর ধারায় ঝরে ঝরে কাউকে থামিয়ে দেয় সবার অজান্তে...

No comments:

Post a Comment